মিয়ানমারের চলমান সংঘাতে উদ্বেগ প্রকাশ করে তা নিরসনে সকল রাজনৈতিক দলগুলোকে আলোচনায় বসার আহ্বান জানিয়েছে চীন।
রোববার মিয়ানমারের চীনা দূতাবাস এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানিয়েছে।
বিবৃতিতে সংঘাত বন্ধে ও সমস্যার নিরসনে দেশটির সকল দলের অংশগ্রহণে কার্যকরি সিদ্ধান্তের দাবি জানানো হয়।
একইসঙ্গে চীন সীমান্তে শান্তি বজায় রাখার জন্যও মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।
বিবৃতিতে মিয়ানমারে অবস্থানকারী চীনা নাগরিকদের সংঘাতপূর্ণ এলাকা এড়িয়ে চলারও পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
রোববার থেকে মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলের চীন সীমান্তে তাং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি, কাচিন ইনডিপেন্ডেন্স আর্মি ও মিয়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক এলায়েন্স আর্মি নামে তিনটি বিদ্রোহী গ্রুপের সঙ্গে সেনাবাহিনীর লড়াই চলছে।
উত্তর সীমান্তবর্তী মুসে এবং কুটকাই শহরের কাছে পুলিশ ও সামরিক বাহিনীর ফাঁড়ির ওপর অতর্কিত আক্রমণ চালায় এ তিনটি জাতিগত বিদ্রোহী গ্রুপ। পরে সেনাবাহিনীর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে ৮ জন নিহত হয়।
লড়াই থেকে বাঁচতে ওই অঞ্চলের অসংখ্য বাসিন্দা এলাকা ত্যাগ করে চীনের দিকে যাচ্ছেন।
মানবিক কারণে চীনও সীমান্ত পেরিয়ে চলে যাওয়া এসব লোকদের গ্রহণ করেছে। চীনের হাসপাতালগুলোতে পালিয়ে যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে অসুস্থ ও আহতদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
অবশ্য গত ৯ নভেম্বর থেকে দেশটির বাংলাদেশ সংলগ্ন রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর সেনাবাহিনীর হত্যাযজ্ঞ নিয়ে চীনা দূতাবাসের বিবৃতিতে কিছু উল্লেখ করা হয়নি।
রাখাইনের ঘটনায় ওয়াশিংটনভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ-এইচআরডব্লিউ গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে জাতিগত হত্যা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে।
জাতিসংঘ জানিয়েছে, মিয়ানমার সেনাবাহিনীর অভিযানে এ পর্যন্ত ৩০ হাজার রোহিঙ্গা বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
মিয়ানমারের সরকারি সংবাদ মাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, গত ছয় সপ্তাহ ধরে চলা অভিযানে অন্তত ৭০ জন রোহিঙ্গা নিহত এবং চারশ’ জন গ্রেফতার হয়েছে।
রোহিঙ্গা অধিকার বিষয়ক অ্যাক্টিভিস্টদের দাবি, আরও অনেক বেশি সংখ্যক রোহিঙ্গা নিহত হয়েছে, যা এরই মধ্যে সাড়ে তিনশ’ ছাড়িয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
নিরাপত্তা বাহিনীর নিপীড়নের মুখে শত শত রোহিঙ্গা শরণার্থী পালিয়ে প্রতিবেশী বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়ার চেষ্টা করছে।
এ প্রেক্ষাপটে সীমান্তে কড়া পাহারা বসিয়েছে বাংলাদেশ। ইতিমধ্যে আশ্রয় নিতে আসা অনেক রোহিঙ্গাকে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে।
রোববার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল স্পষ্ট করেছেন, রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ বন্ধে বাংলাদেশে-মিয়ানমার সীমান্তে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী সতর্ক অবস্থানে আছে।
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে-মিয়ানমার সীমান্ত এলাকায় অস্থিতিশীল পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এ অবস্থায় বর্ডার অতিক্রম করে মিয়ানমারের কেউ যেন বাংলাদেশে ঢুকতে না পারে, সেজন্য বিজিবি, কোস্টগার্ডসহ আইনশৃংখলা বাহিনী সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।’
পাঠকের মতামত